Lockdown in West Bengal,পশ্চিমবঙ্গ লকডাউন
পশ্চিমবঙ্গ সরকার রবিবার জানিয়ে দিয়েছিল, সোমবার বিকেল পাঁচটা থেকে ২৭ মার্চ রাত ১২টা পর্যন্ত লকডাউন হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের ২৩টি জেলা সদরসহ জেলার বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য পৌর শহর। গতকাল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।
এর ফলে আজ বিকেল থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন শহর। বিজ্ঞপ্তিতে এ কথাও বলা হয়েছে, আজ থেকে এই রাজ্যের যানবাহন বন্ধ হয়ে যাবে। চলবে না শহরে বাস, টেক্সি, স্কুটার। বন্ধ থাকবে সব ট্রেন। তবে অত্যাবশ্যক পণ্য বহনকারী গাড়ি চলবে। এই লকডাউনের বাইরে রাখা হয়েছে
👉শাকসবজি ও নিত্যপ্রয়োজনীয়
👉পণ্য বহনকারী যানবাহন
👉 দুধের গাড়ি,
👉 বিদ্যুৎ, গ্যাস,
👉ওষুধের দোকান,
👉হাসপাতাল
👉সংবাদপত্র,
👉সংবাদমাধ্যম,
👉ইন্টারনেট পরিষেবা।
👉আইনশৃঙ্খলা,
👉আদালত ও সংশোধনাগারের পরিষেবা,
👉 স্বাস্থ্য পরিষেবা,
👉পুলিশ, সশস্ত্র বাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী,
👉জল পরিষেবা,
👉দমকল,
👉সিভিল ডিফেন্স,
👉জরুরি পরিষেবা,
👉টেলিকম,
👉আইটি ও ডাক বিভাগ,
👉ব্যাংক ও এটিএম,
👉রেশন,
👉মুদি দোকান,
👉সবজি, ফল, মাছ, মাংস, দুধ, পাউরুটি বিক্রি,
👉 হিমঘর,
👉মুদির ই-কমার্স,
👉খাবার জিনিস,
👉হোম ডেলিভারি,
👉পেট্রল পাম্প,
👉ওষুধের দোকান,
বিদেশ থেকে ফেরা সবাইকে স্থানীয়. স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা মতো কঠোরভাবে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারবেন না।
যেসব জেলাকে এই লকডাউনের আওতায় নেওয়া হয়েছে, তা হলো
👉কোচবিহার জেলা শহর,
👉আলীপুরদুয়ার জেলা শহর,
👉জয়গাঁ টাউন,
👉 জলপাইগুড়ি জেলা সদর,
👉কালিম্পং জেলা শহর,
👉দার্জিলিং সদরসহ কার্শিয়াং এবং শিলিগুড়ি শহর, 👉উত্তর দিনাজপুর জেলা,
👉দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা,
👉মালদহ সমগ্র জেলা,
👉মুর্শিদাবাদ সমগ্র জেলা,
👉নদিয়া সমগ্র জেলা,
👉বীরভূম সব পৌর শহর,
👉পশ্চিম বর্ধমান সমগ্র জেলা,
👉পূর্ব বর্ধমান জেলা শহর,
👉কালনা শহর
👉কাটোয়া শহর,
👉পুরুলিয়া সমগ্র জেলা,
👉বাঁকুরা জেলা শহর,
👉বারজোড়া শহর
👉বিষ্ণুপুর শহর,
👉পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শহর,
👉খড়গপুর শহর,
👉ঘাটাল শহর,
👉ঝাড়গ্রাম জেলা শহর,
👉পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সদর,
👉হলদিয়া টাউন,
👉দীঘা শহর ও
👉কোলাঘাট,
👉কন্টাই শহর,
👉 হাওড়া সমগ্র জেলা
👉 হুগলি জেলা শহর,
👉চন্দননগর,
👉কোন্নগড়,
👉আরামবাগ,
👉শ্রীরামপুর এবং
👉 উত্তরপাড়া শহর,
👉দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার
👉ডায়মন্ড হারবার,
👉ক্যানিং,
👉সোনারপুর,
👉বারুইপুর,
👉ভাঙর,
👉বজবজ
👉মহেশতলা,
👉উত্তর চব্বিশ পরগনার সমগ্র পৌর এলাকা
👉সল্টলেক
👉নিউ টাউন
👉কলকাতা পৌর করপোরেশন এলাকা।
এদিকে ভারতে করোনাভাইরাসে মৃত্যুসংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাত। আর সারা দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে 425জন।
অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে এই আক্রান্তের সংখ্যা এখন 7।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারও এই করোনা রোগ প্রতিরোধের জন্য শুরু করেছে রাজ্যব্যাপী করোনা প্রতিরোধে নানা প্রচার। শহরে করোনা রোগীর প্রতি কী কর্তব্য ইত্যাদি লেখা নানা প্রচারপত্র বিলি করা হচ্ছে। বড় বড় ব্যানার ও পোস্টার লাগিয়ে জনজনকে করোনা নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কী করে এই রোগ প্রতিহত এবং প্রতিরোধ করা যায়, সে কথাও প্রচার করা হচ্ছে। এই প্রচার হচ্ছে রাজ্যের সব হাসপাতাল, ক্লিনিক, হাটবাজার, রাস্তাঘাটসহ কলকাতার সব সংবাদপত্র এবং সংবাদমাধ্যমে। রাজ্যের চিকিৎসকেরাও এই করোনা প্রতিরোধে এগিয়ে এসেছেন। বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকেও তারা চিকিৎসার হাত প্রসারিত করে রোগীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। করছেন সর্বাত্মক সহযোগিতা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আসুন, আমরা সবাই মিলে করোনা প্রতিরোধ করি। রাজ্য সরকার আপনাদের পাশে থেকে আপনাদের সহযোগিতা করছে। আপনাদের সুখে–দুঃখে আছে।'
জনগণকে করোনা প্রতিরোধে আহ্বান জানিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে—
👉করোনাভাইরাস নিয়ে অকারণ আতঙ্ক সৃষ্টি করবেন না, বিভ্রান্তি ছড়াবেন না, ভুয়া খবরে কান দেবেন না, গুজব রটাবেন না, রাজ্য সরকার এই ভাইরাস দমনে সদা সচেষ্ট, সরকারকে সহযোগিতা করুন।
👉স্বাস্থ্য দপ্তর, পুলিশ রেলওয়ে এবং সিভিল এভিয়েশন কর্মীদের সহযোগিতা করুন
👉শিল্পপতিরা শ্রমিক বন্ধুদের কাজে সহযোগিতা করুন, বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিং হোম, ক্লিনিকগুলোকে অনুরোধ, তারা যেন কেউ কোনো রোগীকে চিকিৎসা না করিয়ে ফিরিয়ে দেন। রোগীর পরীক্ষার প্রয়োজন হলে সরকারি হাসপাতালে রেফার করুন
👉মন্দির, মসজিদ, গির্জা, গুরুদ্বার ও অন্যান্য ধর্মস্থানে নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে সেখানে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ করুন, অধিক মাত্রার সমাগম এড়িয়ে চলুন
👉পশ্চিমবঙ্গ সরকার ভাইরাস প্রতিহত করার প্রকল্পে ২০০ কোটি রুপির ফান্ড তৈরি করেছে।
👉ডাক্তার, নার্স ও সব স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মী, আশা কর্মী, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় বাহিনী, রেলওয়ে ও বিমানকর্মীসহ ১০ লাখ স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে মাথাপিছু ৫ লাখ রুপির বিমার বন্দোবস্ত করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
করোনা প্রতিরোধে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পরামর্শ—
👉ন্যূনতম ১-২ মিটার (৩ থেকে ৬ ফুট) দূরত্ব বজায় রাখুন অপরিচিতদের থেকে,
👉ভিড় ও জনসমাগম এড়িয়ে চলুন,
👉দোকান বাজারেও ন্যূনতম ব্যবধান রেখে চলুন,
👉প্রতি ঘণ্টায় সাবান-জল কিংবা হ্যান্ড সেনিটাইজারে হাত ধুয়ে ফেলুন, হাত পরিষ্কার না করে চোখ-নাক-মুখে হাত দেবেন না, প্রেক্ষাগৃহ, রেস্তোরাঁ, পাব, চিত্তবিনোদন কেন্দ্র এড়িয়ে চলুন,
👉বাস-ট্রাম-ট্রেনে ভিড় থাকলে উঠবেন না, টেক্সি ক্যাবে উঠলেও শেয়ারে উঠবেন না, অপরিচিতদের সঙ্গে সামনাসামনি কম দূরত্বে কথা বলবেন না,
👉হেয়ার ড্রেসার, বিউটি পারলার, শপিং মল, নাইট ক্লাব, পাব, এড়িয়ে চলুন। বড় পার্টি, নিমন্ত্রণ বাড়িও এড়িয়ে চলুন,
👉অসুস্থ বোধ না করলে হাসপাতাল ও ক্লিনিকও এড়িয়ে চলুন।
রাজ্যের সব হাসপাতালের চিকিৎসক এবং নার্স ও চিকিৎসাকর্মীদের ছুটি বাতিল করে রোগীদের সেবার জন্য আরও বেশি করে যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে রাজ্য সরকার। যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সে সরকারি হোক বা বেসরকারি হোক, কোনো রোগীকে যেন তারা ফিরিয়ে না দেয়। জটিল হলে তারা যেন দ্রুত তা পাঠিয়ে দেয় নামী হাসপাতালে।
Comments